চল্লিশার এপিঠ ওপিঠ
রিফাত ইসলাম
কোন প্রাণী অমর নয়। মৃত্যু স্বাদ গ্রহন না করে কারোই রেহাই নেই।
তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে মানুষ মৃত্যুবরণ করছে প্রতিনিয়ত। জন্ম তারিখকে যেমন উল্লাসের সাথে উদযাপন করা হয় ঠিক তেমনি মৃত্যুকে কেন্দ্র করেও নামে শোক কাজে উল্লাসের আয়জন করা হয়।
ঠিক ধরেছেন, চল্লিশা বা জেয়াফত বা মেজবানের কথা বলছি। এক এক এলাকায় একেক নাম হলেও কাজ একই, লোকজন দাওয়াত করে জমিয়ে খাওয়ানো। কাজ শুধু এটুকুই নয় সাথে হৈ-হুল্লোড়, হাসা-হাসি, ঝগড়া-বিবাদ, মারা-মারি না থাকলে যেন এই অনুষ্ঠানের পূর্ণতা হয়না।
অনুষ্ঠানটি শোক উপলক্ষে করা হলেও শেষমেশ বিয়ের থেকেও আনন্দের অনুষ্ঠানে পরিনত হয় এটি। বিয়ের থেকেও আনন্দের অনুষ্ঠান কেন বললাম সেটা বলে নিচ্ছি, বিয়েতে শত মজার পরেও মেয়ে বাবার বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে বলে দুঃখ বিরাজ করে মেয়ের পরিবারের মধ্যে। সেই দুঃখে ছেলের পরিবারও কিছুটা ব্যাথিত হয়। তাহলে বিয়েতে দুঃখের স্থান আছে এটা আনন্দের অনুষ্ঠান হওয়ার পরেও।
কিন্তু চল্লিশাতে অধিকাংশ স্থানে শোকের লেশ মাত্র দেখা যায়না বরং এই উপলক্ষে অনেকদিন বাদে দেখা হওয়ায় সবাই মিলে হৈ-হুল্লোড়, হাসা-হাসি, আনন্দ, খাওয়া-দাওয়া, গোশত ভাগাভাগি, ডাল নিয়ে কারাকারি, পায়েস তো বাড়ির জন্য নিতেই হবে সেই নিয়ে ঝগড়া পর্যন্ত লেগে যায়।
তবে কিছু স্থানে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে মৃত ব্যাক্তির জন্য দোয়া করা করা হয় এবং অনুষ্ঠানটি শোকের তার নমুনা লোকেদের মুখ দেখে বোঝা যায়। এরকম জায়গার সংখা বাংলাদেশে অতি নগণ্য যেখানে চল্লিশার অনুষ্ঠান দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে পালন করা হয়।
যেহেতু মূল অনুষ্ঠানটি শোকের এবং দোয়ার তাই উল্লাসের আয়োজন না করে প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা করার সিদ্ধান্তই মনুষত্তের পরিচয় বলে ব্যাক্তিগতভাবে মনে করছি।
No comments